রবিবার বিএনপি-জামায়াতের ডাকা হরতাল এবং আওয়ামী লীগের শান্তি সমাবেশ ঘিরে সর্বশেষ যা ঘটেছে:
বিএনপি’র সকাল সন্ধ্যা হরতাল রবিবার শেষ হয়েছে। সকাল থেকেই ঢাকার রাস্তায় যানবাহন চলাচল ছিলো একেবারেই কম। তবে বেলা বাড়ার সঙ্গে সঙ্গে যানচলাচল কিছুটা বেড়েছে। যদিও স্বাভাবিক সময়ের তুলনায় সেটা কম ছিলো বলেই সরেজমিনে দেখতে পেয়েছেন বিবিসি’র সংবাদদাতারা। অধিকাংশ দোকানপাট, বিপণিবিতান বন্ধ দেখা গেছে। যেসব দোকান খুলেছে, সেগুলোতে ক্রেতা সেভাবে দেখা যায়নি।
প্রায় একই রকম চিত্র ঢাকার বাইরে বিভাগীয় শহরগুলোতেও দেখা যায়। দূরপাল্লার বাস চলাচল বন্ধ থাকায় ঢাকার সঙ্গে জেলা শহরগুলোর সড়ক যোগাযোগ একরকম বিচ্ছিন্নই দেখা গেছে।
হরতালে তিনজনের মৃত্যুর খবর পাওয়া গেছে। লালমনিরহাটে আওয়ামী লীগ-বিএনপি সংঘর্ষে একজন স্বেচ্ছাসেবক লীগ নেতা মারা গেছেন বলে দাবি করেছে আওয়ামী লীগ। ঢাকার ডেমরায় বাসে অগ্নিদগ্ধ হয়ে একজন মারা গেছেন। আর মোহাম্মদপুরে একজন মারা গেছেন। বিএনপি যাকে নিজ দলের নেতা হিসেবে দাবি করে অভিযোগ করেছে, তাকে পিটিয়ে মারা হয়েছে। যদিও স্থানীয়দের বরাত দিয়ে পুলিশ বলছে, “মোহাম্মদপুরে একটি বাসে আগুন দেয়ার পর স্থানীয়দের ধাওয়া খেয়ে ঐ ব্যক্তি একটি নির্মাণাধীন ভবনের ছাদে উঠেছিলেন। পরে সেখান থেকে পরে মারা যান।”
দিনের শুরুতে সকালে নিজ বাসভবন থেকে বিএনপির মহাসচিব মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীরকে আটক করা হয়েছে। তার বিরুদ্ধে নাশকতার দুটি মামলায় গ্রেপ্তার দেখানো হয়েছে। পাশাপাশি বিএনপি’র বেশ কয়েকজন কেন্দ্রীয় নেতার বাসায় তল্লাশি চালায় পুলিশ। দলটির স্থায়ী কমিটির সদস্য আমীর খসরু মাহমুদ চৌধুরী, যুগ্ম মহাসচিব সৈয়দ মোয়াজ্জেম হোসেন আলাল এবং বিএনপি নেতা ইশরাক হোসেনের বাসায় পুলিশ অভিযান চালালেও উল্লেখিত নেতারা বাসায় ছিলেননা।
স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী আসাদুজ্জামান খান কামাল সাংবাদিকদের জানিয়েছেন, শনিবারের সহিংসতা এবং প্রাণহানীর দায় বিএনপি নেতারা এড়াতে পারেন না। এসব ঘটনায় অনেকগুলো মামলা হতে পারে। তিনি বলেন, ”মামলা শুরু হয়েছে। অনেক মামলা দেয়া হবে। যারা ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছে, তারাই মামলা দেবে। আমরা সুনির্দিষ্টভাবে আইডেন্টিফাই করে মামলা দেবো।”
অন্যদিকে সন্ধ্যায় আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক ওবায়দুল কাদের শনিবার ও রবিবারের ‘হামলা’ ও ‘নির্দেশদাতাদের’ বিচারের দাবি জানিয়েছেন। ধানমন্ডিতে দলীয় কার্যালয়ে প্রেস ব্রিফিংয়ে তিনি দাবি করেন, হামলা, ভাংচুর, সংঘর্ষের মাধ্যমে বিএনপি “রাষ্ট্র ব্যবস্থাকে চ্যালেঞ্জ করার দুঃসাহস দেখিয়েছে।”
সংলাপের পথ আর খোলা নেই জানিয়ে তিনি বলেছেন, “আলোচনার পথ বিএনপি রুদ্ধ করেছে। সংলাপের কোন প্রয়োজন নেই।আগ বাড়িয়ে সংলাপের চিন্তা করছি না।”