Padma Jamuna News Agency

মেট্রোরেল চালুর পর মেয়েকে আর হোস্টেলে রাখতে হবে না সাবিনার

উত্তরায় যেতে আজ মা-মেয়ে সকাল ৭টায় আগারগাঁও স্টেশনে হাজির হন। সারি ধরে টিকিট কাটেন। পরে তাঁরা উত্তরাগামী মেট্রোরেলে ওঠেন।

সাবিনার সঙ্গে যখন কথা হয়, তখন মেট্রোরেল উত্তরার উদ্দেশে আগারগাঁও স্টেশন ছেড়েছে। বগিতে বসেই মা-মেয়ের সঙ্গে আলাপ।

প্রথম দিন মেট্রোরেলে উঠতে পেরে দুজনই বেশ উচ্ছ্বসিত ছিলেন। সাবিনা প্রথম আলোকে বলেন, ‘মেয়েকে হোস্টেলে রেখে পড়ালেখা করাচ্ছিলাম। কিন্তু যেদিন মেট্রোরেল চালুর তারিখ জেনেছি, সেদিনই হোস্টেল থেকে মেয়ের নাম বাদ দিয়েছি।’

সাবিনা বলেন, ‘যাওয়া-আসায় আর কষ্ট হবে না। আজকে প্রথম দিন বলে মেয়ের সঙ্গে যাচ্ছি। এর পর থেকে সে একাই যাওয়া-আসা করতে পারবে।’

মেয়েকে হোস্টেল রাখা, তার খাওয়া, হাত খরচ, তাকে দেখতে যাওয়া-আসাসহ এই খাতে প্রতি মাসে একটা ভালো অঙ্কের টাকা ব্যয় হতো বলে জানান সাবিনা। তিনি প্রথম আলোকে বলেন, ‘মেট্রোরেল আমার খরচও কমিয়ে দেবে।’

শামীমুল ইসলামের বাসা আগারগাঁও এলাকায়। উত্তরায় মেট্রোরেলের দিয়াবাড়ি স্টেশনের কাছেই তাঁর অফিস। এই পথে মেট্রোরেল চালু হওয়ায় তিনি ভীষণ খুশি।

মেট্রোরেলে চড়তে ভিড়, যাত্রীদের আনন্দ-উচ্ছ্বাস

শামীমুল প্রথম আলোকে বলেন, ‘আমার জন্য অনেক সুবিধা হয়েছে। বাসা থেকে আগারগাঁও স্টেশনে যেতে আমার সময় লাগে ১০ মিনিটের মতো। আর আগারগাঁও থেকে দিয়াবাড়ি যাব ১০ মিনিটে।’

শামীমুল আগে এই পথে ভেঙে ভেঙে যেতেন। গন্তব্যে পৌঁছাতে তাঁর গড়পড়তা এক ঘণ্টার মতো সময় লাগত। তিনি প্রথম আলোকে বলেন, ‘রাস্তায় যে কষ্টটা আগে করতে হতো, তা আর করতে হবে না। এটাই সবচেয়ে স্বস্তির ব্যাপার।’

ঢাকায় মেট্রোরেল নির্মাণ পরিচালনার দায়িত্বে নিয়োজিত ঢাকা ম্যাস ট্রানজিট কোম্পানি লিমিটেডের (ডিএমটিসিএল) ঘোষণা অনুযায়ী, আজ থেকে মেট্রোরেল চলবে সকাল ৮টা থেকে দুপুর ১২টা পর্যন্ত। অর্থাৎ, দিনে ৪ ঘণ্টা। সর্বোচ্চ ২০০ যাত্রী নিয়ে চলবে মেট্রোরেল। পরে চলাচলের পাশাপাশি যাত্রীসংখ্যা বাড়ানো হবে।

ডিএমটিসিএল জানায়, প্রথম তিন মাস মেট্রোরেল মাঝের কোনো স্টেশনে থামবে না। উভয় স্টেশন থেকেই ১০ মিনিট পরপর ট্রেন যাত্রা করবে। উত্তরা থেকে আগারগাঁও পথ যেতে সময় লাগবে ১০ মিনিট ১০ সেকেন্ড। সপ্তাহে এক দিন, মঙ্গলবার ট্রেন চলাচল বন্ধ থাকবে।

মেট্রোর ভেন্ডিং মেশিনে টিকিট কাটতে বিভ্রাট

আজ যেসব যাত্রী স্টেশনে এসেছিলেন, তাঁদের বেশ কয়েকজনের সঙ্গে প্রথম আলোর কথা হয়। তাঁদের অধিকাংশই জানান, তাঁরা প্রথম দিন মেট্রোরেলে চড়ে ইতিহাসের অংশ হতে এসেছেন। তাঁরা নিছক মেট্রোরেলে চড়ার অভিজ্ঞতা নিতে এসেছেন। আজ কোনো কোনো যাত্রীকে শুধু এক স্টেশন থেকে আরেক স্টেশনে যাওয়া-আসা করতে দেখা যায়।

মেট্রোরেলে চড়তে স্ত্রী ও ছেলেমেয়েকে সঙ্গে নিয়ে স্টেশনে এসেছিলেন মো. সাহাবুদ্দিন। মিরপুরের এই ব্যবসায়ী উত্তরা থেকে আগারগাঁও স্টেশনে ফিরে পরিবারের সদস্যদের সঙ্গে হাসিমুখে ছবি তুলছিলেন। তিনি প্রথম আলোকে বলেন, ‘মেট্রোরেলে কীভাবে চড়তে হয়, কেমন লাগে, সবাই মিলে এর অভিজ্ঞতা নিলাম আরকি!’

Leave a Comment

Your email address will not be published. Required fields are marked *