বুলবুল হাসান, বেড়া (পাবনা) : ছোট বেলায় পরিবারের স্বচ্ছতা আনতে ও দু মুঠো ভাতের আশায় পেশা হিসাবে বেছে নিয়েছিলেন মাটির তৈরি হাড়ি পাতিল বিক্রির ব্যবসা। গ্রামের কুমাড় বাড়ি থেকে মাটির তৈরি হাড়ি, পাতিল,কলস, বিভিন্ন খেলনা সংগ্রহ করতেন। এরপর বাঁশের ঝাকায় মাটির তৈরি ভাতের পাতিল,খোরা, পানির কলস সাজিয়ে মাথায় করে এ বাড়ি সে বাড়ি ঘুরে বিক্রি করতেন । সেই সময় মাটির তৈরি জিনিস পএের বেশ কদর ছিলো । তখন গ্রামের মানুষের হাতে এতো নগদ অর্থ ছিলোনা। সাধারণত গ্রামের কৃষক পরিবারের মানুষ ধান, চাউল,গম, সরিষা, মাশলাই দিয়ে এই সব নিতো। এগুলো আনা-নেওয়া অনেক অসুবিধা হতো। তাই এক টা সময় এসে দুইটা ঝাকার সাহায্যে বাঁশের বাক বানিয়ে নেই। একটি তে মাটির আসবাবপত্র আর বাড়ি বাড়ি থেকে যেটা পেতাম নিয়ে আসি।এভাবেই ভালো ই চলছিলো দিন। বর্তমানে মাটির তৈরি জিনিস আর আগের মতো চলে না তাই এখন সিলভারের জিনিস পএ বাড়ি বাড়ি ঘুরে বিক্রি করি। তা ছাড়া প্লাস্টিকের জিনিস পএ বাজার দক্ষল করে নিয়েছে। তাছাড়াও
সরেজমিনে এ ভাবেই কথাগুলো বলছিলেন ষাট উর্ধ্ব মোঃ ইউনুছ মন্ডল। তাহার বাড়ি পাবনা জেলার বেড়া উপজেলার কৈটোলার জয়নগর গ্রামে । তিনি সাত সন্তানের জনক, ছয় ছেলে ও এক মেয়ে। সবাই কে বিয়েও দিয়েছেন। ছেলে মেয়ের ঘরে রয়েছে নাতি পুতিও। কিন্তু জীবনের পড়ন্ত বেলায় তাকে ফেরি করে উপার্জন করে জীবিকা নির্বাহ করতে হচ্ছে। তিনি আপসোস করে বলেন যে পরিবারের সচ্ছলতা ও সুখের আশায় ব্যবসায় নেমে ছিলাম। সেই আশা আজ গুড়ে বালি। সংসারে ছেলে মেয়ে সবি হলো সুখের দেখা পেলাম না। সবাই আজ যার যার মতো।
নিজের বলতে তো কিছুই রইলো না আমার। ফেরি করে আসবাবপত্র বিক্রি করি বলে আমার বাবা- মায়ের দেওয়া নাম টাও ধরে কেউ আর ডাকে না। সবাই আমাকে এখন ফেরিওয়ালা বলে ডাকে। প্রতিদিন বিভিন্ন বাড়ি ঘুরে ঘুরে জিনিস পএ বিক্রি করে যে আয় হয় তা দিয়ে কোনো মতে স্বামী-স্ত্রীর সংসার চলে। শরীরের শক্তি সামর্থ্য দিন দিন দুর্বল হয়ে পরেছে। তিনি বলেন সরকারের বয়স্ক ভাতার কার্ড পেলে উপকার হতো। আগামী দিনগুলোতে কেমন করে চলবে তার সংসার এই ভাবনায় দিন কাটে ।